মাইক্রোসফট-এর সর্বশেষ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম হল উইন্ডোজ 10। পরপর কয়েকটি উইন্ডোজ এর ভার্সন বের করার পর সর্বশেষ ভার্সন 10 নিয়ে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে মাইক্রোসফট। কেননা উইন্ডোজ এক্সপির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠার পর windows7 আরো বেশি জনপ্রিয়তা পায় কিন্তু windows8 এবং 8.1 তেমন একটি সারা ফেলতে পারেনি। কিন্তু সর্বশেষ উইন্ডোজ টেন সকলের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে।
কিন্তু আজকের পোস্ট যে বিষয় নিয়ে সেটি হলো – বারবার একই উইন্ডোজ কপি ইন্সটল দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত কেন।
আজকের সরাসরি আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। এটা নিতান্তই আমার মতামত। যেহেতু আমার ক্ষেত্রে এই ফলাফল টি ঘটেছে।
এখানে দেখুন আমার ল্যাপটপের কনফিগারেশন।


এই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ আমি 2014 সালের শেষের দিকে কিনি। তখন windows7 ছিল। সে সময় উইন্ডোজ সেভেনে এই কনফিগারেশনে কম্পিউটার চালানো তেমন কোন কষ্ট লাগছিল না। কিন্তু তৎপরবর্তী সময়ে windows8 এবং 8.1 আসার পর আমার কম্পিউটারে ইন্সটল দেয়ার কিছু অভিজ্ঞতা বলছি।
উইন্ডোজ 8.1 ইন্সটল দেওয়ার পর কম্পিউটারের নানা রকম ফাংশন কাজ করছিল না। যেমন ধরুন কোনো সফটওয়্যার আমি ইন্সটল দিতে পারতেছি না। কিছু কিছু কনফিগারেশন ফিচারস মিসিং থাকার কারণে এ সমস্যাগুলো হয়েছিল।
কিন্তু এসব সমস্যার সমাধান করে ও নিজের চাহিদা মত অন্য কোন কাজ করতে পারা যেত না উইন্ডোজ 8.1 এ। যাইহোক এসব সমস্যা নিয়েই কম্পিউটার ব্যবহার করতে ছিলাম। একবার উইন্ডোজ সেভেন দেই তো আবার উইন্ডোজ এইটে ফিরে আসি।
এভাবেই চলছিল দৈনন্দিন কাজকর্ম। আমি মোটামুটি বলা চলে যে প্রতি মাসে একবার উইন্ডোজ ইনস্টল দেই নতুন করে।
এবার আসি উইন্ডোজ টেন এর ক্ষেত্রে আমার কি ঘটেছিল।
উইন্ডোজ টেন এই কনফিগারেশন কম্পিউটারে তেমন একটি সমস্যায় ফেলবে না কিন্তু তার পরেও আমি এই কম্পিউটারে উইন্ডোজ টেন ইন্সটল দিয়েছিলাম। এবং এখনো বলা যায় এখন আমি উইনডোজ টেন ব্যবহার করছি এই কম্পিউটারে।
কিন্তু মূল বিষয়টি এখানে না। উইন্ডোজ টেনে অনেক প্রি-ইন্সটল সফটওয়্যার থাকে যেগুলো মোটামুটি কম্পিউটারকে স্লো করার জন্য যথেষ্ট। আবার হচ্ছে যুগান্তকারী প্রসেসর নিয়ে বসে আছি। যাইহোক, উইন্ডোজ টেন কম্পিউটারে ইন্সটল দেয়ার জন্য মাইক্রোসফ্ট অফিসিয়াল পেইজ থেকে মিডিয়া ডিস্ক ইমেজ সফটওয়ারটি ডাউনলোড করলাম।
তারপর চিরচেনা নিয়ম অনুযায়ী পেন্ড্রাইভে ইউন্ডোজ 10 বুট করে নিলাম যেন পেনড্রাইভ থেকে সরাসরি কম্পিউটারে উইন্ডোজ ইন্সটল দেয়া যায়। প্রথমদিকে কম্পিউটারে উইন্ডোজ টেন ইন্সটল দেওয়ার পরে ভালই চলতেছিল কোন রকম সমস্যা ছাড়াই।
আমি আগেই বলেছি যে, আমি প্রতি এক মাস পর পর পুরো ইনস্টলেশন টি চেঞ্জ করে আবার নতুন করে ইন্সটল দিয়ে কাজ করি। কারন আমার কম্পিউটারটি যেহেতু দুর্বল প্রসেসর দ্বারা গঠিত তাই এক মাস বা 25 থেকে 30 দিন পর কম্পিউটারটি নিতান্তই ধীর গতির হয়ে যেত।
আচ্ছা যেহেতু প্রতি এক মাস পর পর আমি পেনড্রাইভে সেটআপ করা সেই আগের উইন্ডোজ কপি টি ইন্সটল দিচ্ছিলাম। সমস্যাটা ঘটল সেখানেই। পর পর একই উইন্ডোজ কপি পাঁচবার দেয়ার পর যখন একই উইন্ডোজ কপি আবার নতুন করে সেটআপ করলাম এবং কম্পিউটারে ইন্সটল করলাম দেখা গেল কম্পিউটার প্রথম দিক থেকেই খুবই ধীর গতির হয়ে গিয়েছিল।
নতুন করে পুনরায় ডেক্সটপটি সাজাতে গ্রাফিক্স কার্ড সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সফটওয়্যার ইন্সটল দেওয়া শুরু করলাম। কিন্তু দেখা গেল সবগুলো সফট্ওয়ারে ইনস্টলেশন প্রসেস অনেক ধীর গতির এবং সেগুলো দিয়ে কাজ কর্ম করতে আরো বেশি ধীর গতির হয়ে গেছে।
কোন কিছু না বুঝেই প্রথমেই কম্পিউটারের বয়স হয়ে গেছে বলে দাবি করে নিস্তার হতে চাইলাম। প্রসেসর অত্যধিক দুর্বল হয়ে গেছে বলে ধারণা করলাম। এর পরে এই সমস্যা সমাধান করতে আবার নতুন করে উইন্ডোজ কপি টি ইন্সটল করলাম কম্পিউটারে। তার পরেও সেইম সমস্যা দেখা গেল।
এরপর কোনো উপায় না দেখে স্লো কম্পিউটারে ব্যাবহার করতে থাকলাম। দেখা গেল ক্রোম ব্রাউজার দিয়ে কোন ওয়েব পেজ ব্রাউজ করার সময় অত্যধিক ধীর গতির হয়ে গেছে। দু-তিন ট্যাব একসাথে ওপেন করলে দেখা যায় একটা স্লো ব্রাউজিং কিছুক্ষণ করার পর আরেক ট্যাবে ক্লিক করলে কিছুই দেখাচ্ছেনা। অনেকক্ষণ সময় দেওয়ার পর ওই ট্যাব এর রেজাল্ট শো করতেছে।
তারপর দুইদিন আর কম্পিউটার ওপেন করি নাই। নতুন কম্পিউটার কেনার কথা চিন্তা করতেছিলাম। যাই হোক তারপরে কি মনে করে আবার কম্পিউটারটা হাত দিলাম দেখি শেষ ভরসা হিসেবে কোনো উপায় খুঁজে পাই কিনা প্রসেসরটি ভালো করার।
চিন্তা করলাম সবকিছু আবার নতুন থেকেই করব। নতুন করে উইন্ডোজের নতুন কপি ডাউনলোড করলাম লেটেস্ট ভার্সনে। তারপর সেটাকে ইন্সটল করলাম এবং রেজাল্ট দেখে তো আমি অবাক। আবার আগের মতো কম্পিউটার কাজ করতেছে। কোনও স্নো বা কোন হ্যাং এর বিষয় নেই যেটা গত দু-তিন দিন ধরে ছিল।
যাইহোক এতক্ষণ নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে, একই উইন্ডোজ কপি বারবার ব্যবহার করলে কম্পিউটার আসলে ধীরগতির হয়ে যায় যেটা আসলে হওয়ার কথা না। তাই সবার আগে যারা খুব ঘনঘন উইন্ডোজ ইনস্টল দেন তারা যেন একই উইন্ডোজ কপি বারবার না দিয়ে নতুন লেটেস্ট ভার্সনের কপিটি ইনস্টল দেন।
অভিজ্ঞতা কাজে লাগলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।